চিজ! একটি খাবারের নাম যা অনেকের কাছে খেতে ভালো লাগে আবার অনেকের ভালো লাগেনা। এটি শুধু খেতে খুব একটা ভালো না লাগলেও বিভিন্ন খাবারের সাথে খেতে বেশ ্লাগে।
চলুন এই উত্তরে বলা যাক বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের চিজের কথা :
• ব্রি : এটি একটি মাখনের মতো নরম প্রকৃতির চিজ যার উৎস উত্তর ফ্রান্সের ব্রি এলাকায়। প্রস্তুতির সময় এই চিজে ক্রিম যোগ করা হয় যার ফলে এই চিজের ফ্যাট কনটেন্ট বেশি থাকে ও ল্যাকটিক অ্যাসিডের ব্যবহার চিজে একটি মৃদু স্বাদ আনে। এটি অতি জনপ্রিয় একটি চিজ যা ওয়াইন, হ্যাম বা ফলের সঙ্গে ভালো মানায়।
• কাম্যামবার্ট : বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিজ। ব্রিয়ের মতোই এই চিজের উৎসও উত্তর ফ্রান্সেই, তবে নর্ম্যান্ডি এলাকায়। দুটোর স্বাদ অনেকটা সমান হলেও কাম্যামবার্টের স্বাদ ব্রিয়ের চাইতে অনেক জোরালো এবং খানিক টক। ব্রিয়ের থেকে নরমও কম খানিক।
• চেডার : সম্ভবত চিজের সবথেকে জনপ্রিয় প্রকার, এই চিজের উৎস ইংল্যান্ডে। চেডার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, এবং সেটি নির্ভর করে চিজটা কত সময় লেগেছে তৈরী হতে তার উপরে -
- মাইল্ড : ৩ মাস
- মিডিয়াম : ৫-৬ মাস
- ম্যাচিওর : ৯ মাস
- একস্ট্রা ম্যাচিওর : ১৫ মাস
- ভিন্টেজ : ১৮ মাস বা তার ঊর্ধ্ব
মাইল্ড চিজ নরম ও মৃদু স্বাদের হয়ে থাকে ও ভিন্টেজ চিজ শক্ত ও ট্যাঙ্গি স্বাদের হয়ে থাকে, কিন্তু দুটোই যে খুবই সুস্বাদু তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
• কটেজ চিজ : এই চিজের উৎস ইউনাইটেড স্টেটস্ এ। জাপানে টোফু এবং ভারতে পনীর নামে লোকে চেনে। মূলত ছানা থেকে তৈরী হয়ে থাকে এই চিজ। অন্যান্য চিজের থেকে কটেজ চিজ আলাদা কারণ এটিতে ফ্যাট কনটেন্ট খুব কম। প্রোটিন খেতে যারা পছন্দ করেন তাদের জন্য আদর্শ। মৃদু নোনতা স্বাদ থাকে এই চিজে।
• ফেটা চিজ : ফেটা চিজের উৎস গ্রীসে। এই চিজের স্বাদ নির্ভর করে চিজটি কেমন ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তার উপর। এটিকে গ্রিল করে, স্যালাডে দিয়ে বা ম্যারিনেড করে পরিবেশন করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুব ভালো।
• গর্গনজোলা : এটি একটি জোরালো স্বাদের ইতালীয় চিজ। একে শুধু না খেয়ে রন্ধন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করাই শ্রেয়, কারণ চিজটিতে একটি তীব্র গন্ধ থাকে যা অনেকের সহ্য হয়না।
• গুডা চিজ : গুডা একটি ডাচ চিজ যা দক্ষিণ নেদারল্যান্ডস থেকে এসেছে। চেডারের মতোই এরও বিভিন্ন প্রকার রয়েছে :
- ইয়ং : ৪ সপ্তাহ
- ইয়ং ম্যাচিওর্ড : ৮-১০ সপ্তাহ
- ম্যাচিওর্ড : ১৬-১৮ সপ্তাহ
- একস্ট্রা ম্যাচিওর্ড : ৭-৮ মাস
- ওল্ড : ১০-১২ মাস
- ভেরি ওল্ড : ১২+ মাস
এই চিজের স্বাদও বেশ জোরালো।
• গ্রুয়ের চিজ : এটি একটি সুইস চিজ যেটি প্রস্তুত হতে ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় নেয়। এটি শুধু শুধুই খাওয়া যেতে পারে কিন্তু টপিং হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে। টোস্টেড স্যান্ডুইচ ও বিভিন্ন ধরনের ফ্রেঞ্চ স্যুপ ও স্টু্তে এই চিজের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
• হাভার্তি : ডেনমার্কের চিজ যার স্বাদ সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। প্রস্তুত হতে তিন মাস মতো লাগে। ফল, নানা রকম মাংস এবং ওয়াইনের সাথে মানানসই। আবার অনেকে গ্রিল করেও খেতে পছন্দ করেন।
• মাস্কার্পোনে চিজ : এটি একটি ইতালীয় নরম চিজ যা ক্রিম অথবা গরুর দুধ দিয়ে তৈরী হয়। জনপ্রিয় ইতালীয় খাবার রিসোতো, তিরামিসু ও চিজকেকে এই চিজ ব্যবহৃত হয়। ফার্মেন্টশন প্রক্রিয়ার প্রয়োগ না হওয়ায় এটিকে ফ্রেস চিজ বলা হয়।
• মৎজারেলা চিজ : বিশ্বের অন্যতম পরিচিত চিজ। এর নাম সকলেই কম বেশি শুনেছেন। ইতালিতে জন্ম, ইতালীয় মোষের দুধ দিয়ে এই চিজ তৈরী করা হয়। এই চিজের দুই প্রকার রয়েছে — a) ফ্রেস এবং b) ড্রাইড
প্রথম প্রকারের ব্যবহার দেখা যায় স্যালাডে ও দ্বিতীয় প্রকারের ব্যবহার দেখা যায় পিৎজা, লাসানিয়া এবং আরও বেকড্ জিনিসপত্রে।
• পার্মেসান চিজ : এটি একটি ইতালীয় চিজ যা শুষ্ক এবং খুবই জোরালো স্বাদযুক্ত। প্রস্তুত হতে সময় লাগে ১-৩ বছর। খাবারে স্বাদের মাত্রা বাড়ানোর জন্য বিখ্যাত।
• পেকোরিনো রোমানো : বিশ্বের প্রাচীনতম ইতালীয় চিজ, রোমান যুগে এই চিজের উৎপত্তি। নোনতা স্বাদের হয়ে থাকে, যারা জোরালো স্বাদ পছন্দ করেন তাদের জন্য আদর্শ এই চিজ এবং যারা পছন্দ করেন না তাদের জন্য পার্মেসান চিজ ভালো।
• রিকোটা চিজ : এটিও একটি নরম প্রকৃতির ইতালীয় চিজ যার স্বাদ খানিক মিষ্টি। এটি অন্যতম বিখ্যাত চিজ সারা বিশ্বে। প্রোটিনে ভরপুর এবং ক্যালরি কম থাকায় স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি।
• রোকফোর্ট : এই চিজের উৎস ফ্রান্সে। এই চিজে এক প্রকারের ব্যাকটেরিয়া (পেনিসিলিয়াম রোকফর্টি) উপস্থিত থাকে যা কার্ডিওভাসকুলার রোগের থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। প্রস্তুত হতে সময় লাগে ৫ মাস মতো।
• স্টিলটন : ইংল্যান্ডের এক জনপ্রিয় চিজ। সেই অষ্টাদশ শতাব্দীর সময় থেকে এই চিজের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। স্টিলটন চিজ হল Vitamin K2 তে ঠাসা, স্বাস্থ্যের পক্ষেও যা উপকারি।
• ওয়েন্সলিডেল : এটি একটি ব্রিটিশ চিজ যার স্বাদ টক ও তেতোর এক মিশ্রণ। এই কারণেই এই চিজ ফলের (যমন ক্রানবেরি অথবা অ্যাপরিকট) সাথে খাওয়াই ভালো।
যারা অনেকদিন যাবত ভালো মানের মোজারেলা চিজ খুজছেন তারা আমাদের মোজারেলা চিজ টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আশা করি নিরাশ হবেন না। আমরা বিভিন্ন রেস্তোরায় এই চিজ পাইকারি সরবরাহ করে থাকি। যাদের প্রয়োজন তারা যোগাযোগ করতে পারেন।
Comments
Post a Comment